একটি পাগল এবং রাষ্ট্রকাহিনী :: তৌহিন হাসান

একটি পাগল এবং রাষ্ট্রকাহিনী

তৌহিন হাসান

‘...দেখুন, আমরা, মানে পুরো শহর এই মুহূর্তে হুমকির সম্মুখীন। এই অবস্থায়, আমি কিংবা আপনি যে কোনো মুহূর্তে আক্রমণের শিকার হতে পারি। আমরা তো আর জনগণকে মৃত্যুর ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিতে পারি না। দেশ যেখানে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের সরকার দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণের ওয়াদায় অঙ্গীকারাবদ্ধ, দেশের আপামর জনগণের বস্ত্র সংস্থান থেকে শুরু করে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়নে সরকার অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে... এই রকম এক অবস্থায় এ ধরনের কোনো আতঙ্ককে কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে খোলা রাস্তায়, যেখানে, যে অবস্থায় পাওয়া যাবে, পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে...’

 

চারদিকে প্রশ্নের গুঞ্জন উঠল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে ফেনা ওঠার আগেই। গুঞ্জনের মুখে তার কণ্ঠ চাপা পড়ে গেল, তিনি থামলেন কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছতে মুছতে। তার চারদিকে দেশের চারটি টিভি চ্যানেলের মাইক্রোফোন, ষোলোটি বাংলা-ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকদের টেপ রেকর্ডার, ক'জন বিদেশি কূটনীতিক ও সরকারি-আধা সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার ঘাগু ঘাগু গোয়েন্দাদের সামনে তিনি অসহায় বোধ করতে লাগলেন।

 

প্রশ্ন উঠল, ‘আপনি কি মনে করেন না মি. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দেশে খাদ্যের চরম ঘাটতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিই এই ঘটনার মূল কারণ?’

 

‘খাদ্যমন্ত্রী মহোদয় বিষয়টির ভালো উত্তর দিতে পারবেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিনমিন গলায় উত্তর দিলেও তিনি গলা চড়িয়ে বলার চেষ্টা করলেন, ‘...তবে দেশে আজ বিরাজ করছে শান্তিময় পরিবেশ, সহিংস ঘটনা দেশে আজ নেই বললেই চলে, দেশে সন্ত্রাস পুরোপুরি নির্মূল হয়েছে, আজ জনগণের জানমাল পুরোপুরি নিরাপদ, তাই আমি বলতে চাই...’

 

তিনি আর বলতে পারলেন না, আবার প্রশ্ন উঠল, ‘আজ সকালে যে পুলিশ কনস্টেবলের নির্মমভাবে মৃত্যু হল, এ ঘটনাকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?’

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কপালের ঘাম মুছতে লাগলেন, ‘আমি আরেকবার বলেছি, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনামাত্র। আমাদের দক্ষ পুলিশের একটি ফোর্স ওই পাগলটিকে ধরার জন্য একটি মিশন পরিচালনা করেছিল, আর সেই মিশনে পুলিশ কনস্টেবল তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে যে ত্যাগের পরিচয় দিয়েছে, তা বিরল। সরকার কনস্টবল আতাউর রহমান আতার পরিবারকে একটি দশ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেছে। এমনকি একটি পুলিশ বক্সের নামকরণও...’

 

চারদিকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলছে নিভছে, আর তার কপালের ঘামগুলো চিক চিক করে উঠছে ফ্ল্যাশের আলোয়।

 

ক’দিন ধরে শহরে সন্ধ্যা নাবতেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দু’ একটা গাড়ি এদিক ওদিক হুস-হাস ছুটে চললেও আরোহীগণ আতঙ্কিত চোখে গাড়ির উইন্ডশিল্ডে ডানে-বামে কিছু একটা খুঁজে ফিরে আবার চোখ দুটো আধবোজা করে সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে। রাস্তায় টহলধারী পুলিশও তাদের হাতে অর্পিত সাত সেরী বন্দুকগুলো শক্ত করে ধরে রাখে আর গলা খাকারি দিতে দিতে রাস্তায় টহল দেয়। মধ্যবিত্ত বাড়িগুলোতে বাবা-মা'রা তাদের সন্তানকে আগলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে বিটিভিতে রাত আটটার সংবাদের পর নাটক না দেখেই।

 

মাঝরাতেও মন্ত্রণালয়ে জরুরি মিটিং শেষ হয় না; মন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী, সচিব, উপ-সচিব, সরকারি আমলাদের গম্ভীর মুখের ক্ষেত্রফল রাত বাড়তে বাড়তে কমে আসে, ঘুমের কথা ভুলে যান তারা; কারণ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যেখানে পুরো বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।

 

পরদিন কোনো একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বিশেষ বুলেটিন প্রচারিত হয়, ‘আজ ভোরে, আনুমানিক পাঁচটা আটান্ন মিনিট বেয়াল্লিশ সেকেন্ড সময়ে শহরের দক্ষিণপ্রান্তের কাঁচা বাজারে একটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে, যার মৃত্যুর পর কণ্ঠনালী কামড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লোকটি একজন পেঁয়াজ ব্যবসায়ী। তবে তার এ রকম মৃত্যু কিভাবে হয়েছে সেই সম্পর্কে আশপাশের লোকজন কোনো তথ্য দিতে পারেনি।’ টিভি ক্যামেরার রিপোর্টার বারবার ক্যামেরার লেন্সটিকে ছিঁড়ে ফেলা কণ্ঠনালীর ওপর ফোকাস করছিল বলে শহরের লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ে টিভি সেটের ওপর। বাড়ির কর্তাব্যক্তি গম্ভীরমুখে বসে তা দেখতে থাকেন কপালের ওপর নদীর ঢেউয়ের মতো ভাঁজ ফেলতে ফেলতে আর বাড়ির গিন্নি তার হাত জড়িয়ে আতঙ্কিত চোখে তাকিয়ে থাকেন টিভিসেটের পাশে থাকা শোকেস আলমিরার দিকে। ঝি-চাকরেরা দুর্বোধ্য সুরে সূরা কলেমা পড়তে থাকে আর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বাড়িতে বন্দি শিশুরা চেঁচাতে থাকে ‘বাবা বেড়াতে যাব, বাবা বেড়াতে যাব’ বলে।

 

টিভি রিপোর্টারের গলা ততক্ষণে ফেঁসে গেছে পুরো রিপোর্টটি পড়ে শেষ করার আগেই, ‘...এলাকাবাসী ধারণা করছে, এই হত্যাকাণ্ড একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাও হতে পারে। কারণ, মৃতদেহটির কণ্ঠনালী বীভৎসভাবে কামড়ানো হলেও... আশপাশে কয়েকটি ক্ষ্যাপা কুকুরকেও দেখেছে এলাকাবাসী। তবে অনেকে মনে করছেন, এটি ওই পাগলের কাণ্ড হতে পারে, এমন বিষয়টিও উড়িয়ে দেবার মতো নয়।... তবে আশপাশে কুকুরগুলোকে দেখে অনেকে মনে করছেন...’

 

টিভি চ্যানেল ও পত্র-পত্রিকায় এই সংবাদ যেদিন এলো বাতাসে তুলোর মতো মানুষের মনে ছড়িয়ে দিচ্ছিল, তারও মাস দুয়েক আগে শহরের যেদিকটায় নদী, তার উত্তরদিকের ছাপাখানা দোকানের পিছনের গলির শেষ মাথায় ঝড়ে কাত হয়ে যাওয়া একটি ল্যাম্পপোস্টের নিচে এক মাঝবয়সী লোক তিনদিন না খেয়ে শুয়েছিল। ল্যাম্পপোস্টের গোড়া ঘেঁষে যে পিচ-সুরকি ক্ষয়ে যাওয়া রাস্তাটি পুরান শহর থেকে বেরিয়ে নতুন অট্টালিকাময় শহরের দিকে চলে গেছে, তার এপাশ-ওপাশে মিলে দুটি খাবারের দোকান, তিনটি পান-বিড়ি, একটি জুতা সেলাইয়ের কারখানা, একটি বই বাঁধাইয়ের ঘর এমনকি তিনটি বাড়ির প্রবেশ দরজার গেট ও একটি অব্যবহৃত ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে দৈনিক হাজার সাড়ে তিনেক লোক যাতায়াত করে। কিন্তু লোকটা ঠিক একই জায়গায় পড়েছিল তিনদিন নয় ঘণ্টা উনত্রিশ মিনিট, না খেয়ে। ল্যাম্পপোস্টের উল্টোদিকের পান দোকানদার ফতু মোল্লা প্রথমে লোকটিকে একটু দেখে সন্দেহপ্রবণ হয়েছিল যদিও, পাশের খাবার দোকানে খদ্দের বেশি হওয়াতে তাকে পানের খিলি বানাতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল বলে পরে আর সেদিকে নজর দেয়ার ফুরসত হয়নি তার। ফতু মোল্লার পানের দোকানের আড়াআড়ি কাফিলের বই বাঁধাইয়ের ঘর। যে ছেলেটা রোজ পঁচিশ টাকা চুক্তিতে কাগজ ভাঁজ করে, নাম ছেনু মিয়া, কাগজ ভাঁজ করতে করতে আড়চোখে কয়েকবার লোকটার দিকে তাকিয়েই বুঝেছিল লোকটা শহরে উটকো একটা ঝামেলা, দু'একবার কাগজের দলা ছুড়ে দিলেও ইচ্ছে ছিল খানিক পর লোকটাকে একটু খুঁচিয়ে আসে, পারত, যদি না তাকে বাঁধাই করা আড়াই হাজার বইয়ের একটি মালের ডেলিভারির ভ্যানের সঙ্গে নতুন শহরের দিকে যেতে হত। পরের দিন ছোট্ট দোকানে না আসলেও পাড়ার অন্যান্য ছোট ছোট ছেলে-ছোকরারা বুঝে গিয়েছিল ল্যাম্পপোস্টের গায়ে হেলান দেয়া আধশোয়া লোকটি একটি পাগল, আর তারা ক্রমাগত ঢিল ছুড়তে থাকল দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি যদিও লোকটাকে একচুল নড়ানো যায়নি ওই জায়গা থেকে।

 

তৃতীয়দিন লোকটা উচ্চস্বরে বা চিৎকার করে বা কান্নায়িত ভারি গলায় জানিয়ে দিল তার নাম মইনুদ্দিন এবং সে একটা পাগল এবং তার ক্ষিধে পেয়েছে আর সে তখনই সকলের সামনে একটা কাণ্ড করে বসল।

 

এই ঘটনারও নয়দিন আগে, মইনুদ্দিন মঙ্গার এলাকা থেকে লালচে ইটের পুরান শহরে এসে পৌঁছতে পেরেছিল পিঠের সঙ্গে পেট মিশে যাওয়া শরীর নিয়ে। গাড়ি থেকে নেমেই সে গড়িয়ে পড়ল শহরের মেঝেতে। বলল, ‘হামাক ভুক পায়ছে।’

 

তারও দুইদিন আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী আটান্নজন সরকারি, আধা-সরকারি মুখোশদের সঙ্গী করে উড়োজাহাজ চেপে দেশের মাটিতে নেমে টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় হাসিমুখে জানালেন, ‘সুখবর, সুখবর। দেশে আর কোনো খাদ্য ঘাটতি থাকবে না। অক্লান্ত চেষ্টার পর সরকার বৈদেশিক সংস্থার কাছ থেকে ঋণ পাচ্ছে। ক’দিন পরে বস্তা বস্তা গম আসছে, চাল আসছে, ডাল আসছে, চিনি আসছে, দুধ আসছে, সেমাই আসছে, দারুচিনি, বিদেশি কাপড়, পায়ের চপ্পল, বাচ্চাদের খেলনা...। দেশ আজ দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত। চাল আসছে, ডাল আসছে, চিনি আসছে...।’

 

মইনুদ্দিন ফতু মোল্লার দোকানের সামনের রাস্তার উল্টোদিকে ল্যাম্পপোস্টের গোড়ায় উবু হয়ে প্রথম কাণ্ডটি করে বসল অর্থাৎ নয় বছরের বাচ্চা মেয়েটিকে কামড়ে দিল। বাচ্চাটি নীল রঙের স্কুলড্রেস পরে পিঠে বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দুপুর বারোটার ঠিক পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরে ফুটপাতের বিছানো ইটের সারি গুনতে গুনতে বাড়ি ফিরছিল। বাচ্চাটি মইনুদ্দিন পাগলকে পূর্বে দেখেছে কি দেখেনি, ঠিক পাগলটার কাছাকাছি আসতেই ঠিক ওইদিন, পাগলটা বাচ্চা মেয়েটির গলার কণ্ঠনালী কামড়ে নিজের মুখ লাল করল। তাতে বাচ্চাটি অজ্ঞান হওয়ার আগে পর্যন্ত চিৎকার করতে পারল না।

 

তারপর থেকে মইনুদ্দিন পাগলকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না।

 

আর তাতেই আতঙ্ক বেড়ে গেল রাষ্ট্রের আইন রক্ষাকারী সংস্থা, প্রতিরক্ষা বাহিনী, সরকারি নীতি-নির্ধারক আর হেন-তেনদের। শহরের এখানে সেখানে মানুষ যখন-তখন অতর্কিত কামড়ের শিকার হতে লাগল। পাগলটা যতই ক্ষুধাকাতুরে পাগল হোক না কেন, কোনো মানুষকে কামড়ে তার ক্ষুধা ভাগাবে-এমনটি যারা বিশ্বাস করল না, তারা মনে করতে লাগল নির্ঘাত এটা ক্ষ্যাপা কুকুরের কাজ। অতএব কুকুর খেদাও। পত্রিকায় লেখা হল, চিঠিপত্র কলামে, এডিটোরিয়ালে, পোস্ট এডিটোরিয়ালে, বিশেষ কলামে-ক্রোড়পত্রে, প্রবন্ধে ও নাগরিক টেলিফোন মন্ত ব্যে। অতএব বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত কুকুর খেদানো লোক নিয়ে আসা হল। তারা কুকুর খেদাতে লাগল শুধুমাত্র নেড়ি কিন্তু ক্ষ্যাপা কুকুরগুলো আর লোমশ কুকুরগুলো রোস্ট করে খেতে লাগল বাঙালি গরুপ্রিয় মানুষগুলোর চোখের আড়ালে। ফলে অন্য শান্ত কুকুরগুলো হয়ে উঠতে শুরু করল আরও বেশি ক্ষ্যাপাটে। হঠাৎ একদিন যখন বাঙালি লোকগুলো জেনে গেল বিদেশিদের অন্ধকারে-আড়ালে-আবডালে কুকুর খাওয়ার কথা, তারাও কুকুরের চেয়ে বেশি ক্ষ্যাপাটে হয়ে উঠল।

 

টিভি চ্যানেলগুলোতে বিশেষ বুলেটিন প্রচারিত হতেই থাকল। ক্যামেরার লেন্স জুম থেকে আরও জুম হল ক্ষ্যাপাটে মানুষগুলোর মুখের বলিরেখার ওপর, কুকুরগুলোর ভয়াল দাঁতের ওপর। নিউজ প্রেজেন্টারের গলা ক্রমেই ফ্যাকাশে হয়ে উঠল।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আধঘণ্টা পরপর ক্যামেরায় নিজের পলিশ করা মুখ দেখিয়ে জনগণকে বারবার হাসিমুখে অভয় দিয়ে যাচ্ছিলেন, ক্ষ্যাপাটে কুকুর কিংবা মানুষ কিংবা মইনুদ্দিন পাগল-কাউকেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশ-বিডিআর-সেনাবাহিনী-র‍্যাব সকলেই জনগণের পাশে আছে। চারদিকে টহল দেয়া হচ্ছে, পাগলাটাকে দেখামাত্র যে কোনো মুহূর্তে...

 

এ শহরের পূর্বদিক থেকে মাত্র খবর এল, কেউ একজন পাগলটার লাশ দেখতে পেয়েছে। খবরটা চাউর হয়ে গেল পুরো শহরে। শহরের মানুষ, কুকুরখেকো বিদেশি, মন্ত্রী-আমলা-সচিব, ডিআইজি-ব্রিগেডিয়ার-ক্যাপ্টেন, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ-সেনাবাহিনীর সেনা ট্রপ, টিভি ক্যামেরা, নিউজ প্রেজেন্টার, সাংবাদিক সবাই শহরের পশ্চিম অংশ খালি করে পূর্ব দিকে ছুটে গেল ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে।

 

তাদের মধ্যে ছিলেন একজন বৃদ্ধ ডাক্তার যিনি মইনুদ্দিন পাগলের মৃতদেহকে উল্টে-পাল্টে, নেড়েচেড়ে শুধু একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন আর উপস্থিত সকলের হাজার হাজার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ... বরং লোকটি প্রায় সপ্তাহ-অধিক সময় অনাহারজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছে। ভীষণ পুষ্টিহীনতায় ভুগছিল সে...

 

সেই মুহূর্তে শহরের দক্ষিণ অংশ থেকে খবর এল, সেখানে এইমাত্র একটি কিশোরের লাশ পাওয়া গেছে, যার বুক বরাবর কামড়ে ছেঁড়া এবং সেখান থেকে হৃদপিণ্ডটা কেউ টেনে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলেছে।

কটি পাগল এবং রাষ্ট্রকাহিনী :: তৌহিন হাসান


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post